সাবধান বাণী স্বপ্নের দ্বারা | বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী রহঃ এর জীবনী Part 16 | Boro Pir Abdul Kadir Jilani Ar Jiboni

Abdul Kadir Jilani

সাবধান বাণী স্বপ্নের দ্বারা

বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) মাত্র আট বছরের বালক। ঠিক ঐ সময়ে এক রাত্রে

তিনি অত্যন্ত কাতর হয়ে পড়ে তৎক্ষণাৎ গিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি স্বপ্নে
দেখলেন একজন উজ্জ্বল জ্যোতির্বিশিষ্ট বেহেশতের ফেরেশতা তাঁর শিয়রে এসে খুব কোমল স্বরে
বলছেন, হে আল্লাহর মনােনীতি আবদুল কাদের! উঠ, আর ঘুমের ঘােরে থেকনা। সুখ শয্যার
কোলে ঢলে পড়ার জন্য দুনিয়াতে তামার আগমন হয়নি। মােহ নিদ্রাচ্ছন্ন মানুষকে মুক্ত করার
জন্যই তুমি দুনিয়াতে আগমন করেছ। তােমার কর্মক্ষেত্র সুদূর প্রসারী।

বড়পীর (রহঃ) ঘুমের মধ্যে প্রায়ই এ ধরনের স্বপ্ন দেখতেন। তার কোমল হৃদয়পটে এ সকল
স্বপ্নাদেশ ও অদৃশ্য ইঙ্গিত সুস্পষ্ট রেখাপাত করত। আল্লাহর মনােনীত অলী হিসেবে তাঁর আচার
আচরণ, ব্যবহার, শিক্ষাদীক্ষা, সৎসংসর্গ এবং পবিত্র চিন্তা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছিল।
পরবর্তীকালে এ সকল সদগুণাবলী তাঁর জীবনে ফলপ্রসূ হয়েছিল। যার কারণে তিনি শ্রেষ্ঠ পীর ও
আল্লাহর অলী হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করতে পেরেছিলেন এবং আল্লাহর প্রিয় বান্দা হিসেবে গণ্য
হয়েছিলেন।

 
হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) -এর বাল্য জীবনের ঘটনাবলী বলতে যেয়ে, জনৈক
চিন্তাশীল লেখক বর্ণনা করেছেন-বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) আট বৎসর
বয়সের সময় একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন। তিনি দেখতে পেলেন অদৃশ্য এক ব্যক্তি তাঁকে উদ্দেশ্য
করে বলছেন-হে আবদুল কাদের! নিদ্রাভঙ্গ করে উঠ। কেন তুমি আল্লাহকে ভুলে সুখের নিদ্রায়
বিভাের হয়েছ। এবার উঠ। উঠে বসে বিশ্বপালকের ইবাদতে নিয়ােজিত হও।
এই স্বপ্ন দেখে তিনি তৎক্ষণাৎ নিদ্রার অবসাদ ঝাড়িয়া ফেলে আল্লাহ্ তাআলার নাম স্মরণে
নিমগ্ন হয়ে গেলেন।

প্রাথমিক শিক্ষা

মুসলিম সমাজের নিয়মানুসারে বড়পীর হযেরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর
শৈশবকালে শিক্ষার হাতে খড়ি হয়েছিল তাঁর পিতা ও মাতার মাধ্যমে। তিনি নিজ পিতা-মাতার
কাছে হতে প্রাথমিক শিক্ষা গুহে বসেই শেষ করেছিলেন। প্রথমেই তিনি কোরআন পাক হেফজ
করেন। ঘরের শিক্ষার বাহিরে জিলান নগরে স্থানীয় মক্তবেও তিনি বিদ্যাশিক্ষা করেন। তাঁর মেধা
শক্তি প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে ও আল্লাহ প্রদত্ত প্রজ্ঞার ফলে বাল্যজীবনে অসাধারণ পাণ্ডিত্য অর্জন
করেছিলেন।
 

সঙ্গী ফেরেশতা

আগ্রা নিবাসী মাওলানা মােহাম্মদ ছাদেক আলী (রঃ) প্রণীত একখানি কিতাবে বর্ণিত হয়েছে,
হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) দশ বৎসর বয়সে বিদ্যা শিক্ষার জন্য জিলান শহরে একটি
মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সে সময় মসজিদের সাথে ছােট ঘরে বালকদের মক্তব বসত। জনসংখ্যার
তুলনায় মক্তবের সংখ্যা ছিল খুবই কম এবং ছাত্রদের সংখ্যা ছিল অধিক পরিমাণ। এ কারণে
প্রতিটি মক্তবে শিক্ষার্থীদের ভীড় লেগেই থাকত। অল্প পরিসরে কোনঠাসা অবস্থায় ছাত্ররা নিজ
নিজ পাঠে মনােনিবেশ করত। একদিন বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) মক্তবে

উপস্থিত হলেন। আগে থেকেই মক্তবের ছাত্রগণ এমনভাবে স্থান দখল করে বসেছিল যে, উত্ত
প্রকোষ্টে আর কারও বসার স্থান ছিলনা। এমন সময় অদৃশ্য আওয়াজ হল। যে ছাত্রগণ! এ
বালকের জন্য তােমরা বসার জায়গা করে দাও। কিন্তু উপস্থিত ছাত্রগাণ এ আওয়াজের কোন গুরুত্ব
দিলনা। অবশেষে খুব গষ্টীর কণ্ঠে আওয়াজ হল, হে ছাত্রগণ! তােমরা কি দেখতে পাওনা যে,
আল্লাহর প্রিয় অলী দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন।

উঠ, তাকে বসার স্থান করে দাও। এ অদৃশ্যবাণী
উপস্থিত শিক্ষক ও ছাত্রমণ্ডলী সকলের কানেই ভষণভাবে আঘাত করল। সকলেই হকচকিয়ে
বিশ্ময়াপন্ন হয়ে গেল। অবশেষে ছাত্ররা হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-কে বসার
জায়গা করে দিল। উপরােক্ত দৈববাণী তাঁর সঙ্গী ফেরেশতার মুখ হতে বের হয়েছিল। এ অদৃশ্য
ফেরেশতা সর্ব ক্ষেত্রেই তাঁকে ছায়ার মত অনুসরণ করত।
 

 বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী ( রহঃ ) এর জীবনী

Post a Comment

0 Comments