পিতা আবু সালেহ (রহঃ)-এর ইন্তেকাল
আবাল্য কাল হতেই নির্ভুল সাধনা করে হযরত আবু সালেহ মূসা (রহঃ) বার্ধক্যে একটি
পুত্রসন্তান লাভ করেছিলেন। এ বিশ্ব জগতের মায়া সব মানুষেরই কম বেশি আছে। সম্পদ, সন্তান
সন্তুতি, প্রভাব প্রতিপত্তি, পার্থিব উন্নতির আশা। আল্লাহর প্রেমের আশা। বস্তুত মানুষের সমস্ত
জীবনটাই যেন আশায় থাকে।
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর পিতা আব সালেহ মুসা (রহঃ) একটি আশার প্রদীপ জ্বলছিল। আল্লাহ্ তা'আলার অসীম কুদরতের ফলস্বরূপ
বৃদ্ধ বয়সে এক পুত্রলাভ করে এবং পুত্রের অলৌকিক ঘটনা দেখে তিনি আশায় বুক বেঁধেছিলেন।
যেভাবেই হােক পুত্রকে তিনি উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবেন। বড়পীর হযরত আবদুল
কাদের কোরআন মুখস্থ করার পর প্রয়ােজনীয় তালীম তাঁর পিতার কাছে থেকে পেয়েছিলেন। তাঁর
মাতাও সন্তানের বিদ্যা শিক্ষার ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলেন।
সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা (রহঃ) তাঁর পুত্রের তীক্ষ্ণ মেধাশক্তি জ্ঞান অর্জনের একাগ্রতা, উচ্চ
শিক্ষা লাভের আকাংখা এবং বিভিন্ন গুণগরিমার প্রতি প্রথম হতেই সতর্ক দৃষ্টি রেখেছিলেন। গৃহ
শিক্ষা ও মক্তবের শিক্ষা সমাপনান্তে তার জন্যে উচ্চ শিক্ষা লাভের ব্যবস্থা কবতে তিনি বদ্ধ পরিকর
ছিলেন। কিন্তু সে সময়ে জিলান শহরে কোন উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি। এ জন্যে তাঁর
পুত্রকে বিদেশে পাঠানাের কথা চিন্তা করতে লাগলেন। পুত্রের বয়স ও পারিপাশ্শ্বিক অবস্থার দিকে
লক্ষ্য করে তাঁকে একাকী কোথাও পাঠাতেও ইচ্ছা করছিলনা। তবে পুত্রের জন্য এ মঙ্গল চিন্তা
সবসময়ই তার মনকে আলােড়িত করত। কিন্তু তার সে আশা ফলবতী হতে পারেনি। তাঁর মনের
হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর জীবনী
আশা আল্লাহ্ তা'আলার অমােঘ ইঙ্গিতে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে গেল। আল্লাহর প্রয় বান্দা এগার
বছরের পুত্র হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ), স্ত্রী ও অসংখ্য ভক্তকে শােকের সাগরে ভাসিয়ে
তিনি পরলােকে যাত্রা করলেন। হযরী চারশত আশি সাল। সমস্ত জিলান নগরী শােকে মুহ্যমান
হয়ে পড়ল।
হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) বাগদাদ শহর হতে প্রায় চারশত মাইল দূরে
জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর জীবনের বিরাট একটা সময় বাগদাদে অতিবাহিত করছিলেন।
0 Comments
Please Don't Send Any Spam Link