বড় পীর আব্দুল কাদের জিলানী ( রহঃ ) এর জীবনী
তরীকতের জ্ঞান শিক্ষা
পূর্ণরূপে ইলম শিক্ষা গ্রহণ করে তিনি ইলমে তরীকতের দিকে পূর্ণ মনােযােগ প্রদান
করলেন। এ তরীকতের ইলম তিনি অধিকাংশই হযরত আবুল খায়ের হাম্মাদ ইবনে মুসলিমদাব্বাস হতে শিক্ষ, লাভ করেছিলেন।
এ মহাপুরুষ বাগদাদ নগরীর বিখ্যাত ও শ্রেষ্ঠ শায়খ
ছিলেন। হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) স্বীয় পীরে তরীকতের সাথে সাক্ষাতের ঘটনা
এভাবে বর্ণনা করেছেন, 'এক সময় বাগদাদ নগরীতে ফেৎনা ও ফাসাদ এত অধিক হয়ে পড়ল যে,
আমি বাগদাদ পরিত্যাগ করে অন্য কোথাও যাওয়ার সংকল্প করলাম। এ উদ্দেশ্য কোরআন শরীফ
হঠাৎ আমার কানে গায়েব থেকে একটি
আওয়াজ এল, কোথায় যাচ্ছি?' উক্ত আওয়াজের ফলে এমন প্রবল বেগে আমার শরীরে এক ধাক্কালাগল যে, আমি সামলাতে না পেরে মা্টিতে পড়ে গেলাম। গায়েবী আওয়াজদাতা পুনরায়
বললেন, 'ফিরে যাও, তােমার দ্বারা আল্লাহ্পাকের বান্দাগণ উপকৃত হবে।
তখন আমি বললাম, 'আমি তাে শুধু আমার দ্বীন ও ঈমানের হেফাযত করতে চাই
আল্লাহপাকের বান্দাগণের দ্বারা আমার কি কাজ? আমি আমার দ্বীন ও ঈমানের হেফাযতের
উদ্দেশ্যে ফেত্না-ফাসাদপূর্ণ শহর হতে জঙ্গলের দিকে যাচ্ছি।
আবারও গায়েব হতে আওয়াজ
এল, তুমি কোথাও যেও না, এ শহরেই অবস্থান করতে থাক, তােমার দ্বীন ও ঈমান হেফাযতেথাকবে। এর পর আমার উপর এমন কতগুলি অবস্থার আবির্ভব হল, যা আমার কাছে কিছু
দুর্বোধ্য ছিল। আমি সেই অবস্থা দেখে আল্লাহ্ তা'আলার কাছে প্রার্থনা করলাম, "ইয়া আল্লাহ্!
আমাকে এমন কান একজন লােকের সন্ধান দিন, যে লােক আমাকে এ দুর্বোধ্য অবস্থার সঠিক
সমাধান ও তাৎপর্য বলে দিতে পারেন। পরবর্তী দিবসে আমি মুযাফফরিয়া হয়ে সামনের দিকে
অগ্রসর হচ্ছিলাম। মুযাফফরিয়ার কোন ঘরের দরজা -খুলে এক ব্যক্তি আমাকে সম্ভোধন করে
বললেন, 'আবদুল কাদের গতকাল তুমি আল্লাহ্ তা'আলার কাছে কি প্রার্থনা করেছিলে?' এ শুনে
আমি নীরব রইলাম, আর কিছুই বলতে পারলাম না। তারপর সেই ব্যক্তি খুবই রাগান্বিত হয়ে
মুখের ও চোখের উপর পতিত হল। আমি বােকার মত সেখান হতে চলে এলাম। কিছুদূর অগ্রসর
হলে গত রজনীর মুনাজাতের কথা আমার স্মরণ হল এবং চলতে চলতে আমার ধারণা হল, এ
লােকটি অবশ্যই কোন একজন ওলী আল্লাহ্ হবেন। সুতরাং সেই, দরজাটি খুঁজে বের করার
উদ্দেশ্যে আমি তথায় ফিরে এলাম। কিন্তু বহু অনুসন্ধান করা সত্ত্বেও দরজাটি খুঁজে বের করতে
পারলাম না। এতে আমার মনে খুব দুঃখ হল
আনেক দিন পরে আমি তাঁকে চিনতে পারলাম এবং তার খেদমতে যাতায়াত করতে
থাকলাম। তাঁর কাছ থেকে নিজের মনের সন্দেহের সমাধান করায়ে তরীকতের ইলুম শিক্ষা
করলাম। এ বুযুগ লােকাট ছিলেন শায়খ হাম্মদ হবনে মুসলিম দাব্বাস (রহঃ)।
0 Comments
Please Don't Send Any Spam Link